কাকতাড়ুয়া উপন্যাসের পটভূমি কি বা মূলভাব বিষয়বস্তু জেনে নিন
নবম ও দশম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে থাকা এই কাকতাড়ুয়া উপন্যাস নিয়েই আজকের আয়োজন। আপনি যদি ইতিমধ্যেই কাকতাড়ুয়া উপন্যাসের পটভূমি কি বা মূলভাব বিষয়বস্তু, তাহলে আজকের ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে বিস্তারিত জেনে নিন। আমাদের ওয়েবসাইট আপনার পাঠ্যবই থেকে বিভিন্ন পাঠ্য পূর্ণ. সার্চ বক্সে অনুসন্ধান করে, আপনি যে কোনো কবিতা, গদ্য, উপন্যাসের সারমর্ম, ধারণার বিস্তার, সারাংশ, সারমর্ম, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ ইত্যাদি পড়তে পারেন। চলুন আর কিছু না করে শুরু করা যাক।
কাকতাড়ুয়া উপন্যাসের মূল বক্তব্য কি
ছায়া ঢাকা, পাখি ডাকা, শস্য-শ্যামলা সবুজ বাংলার কোনাে একটি গ্রামের এক কিশাের বুধা। এক চাচি আর চাচাতাে ভাই-বােন ছাড়া তিন কুলে আপনজন বলতে তার আজ আর কেউ নেই। তবে একদিন পরিবার বাবা-মা, ভাই-বােন সবাই ছিল। এক রাতে কলেরায় সবাই মারা গেল । ভাগ্যক্রমে সে বেঁচে যায়। চাচির বাড়িতে প্রথমে সে আশ্রয় নেয়।
চাচি দারিদ্র্যের কথা তুললে বুধা সেই বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। সেই থেকেই সে একা । ঔপন্যাসিক এর সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন- “রাত পােহালে দিনের আলাে, সূয্যি ডুবলে আঁধার । ওর কাছে দুটোই সমান । হাটে-মাঠে ঘুরে বেড়ায় । ঘুরতে ঘুরতে যে কোথায় যায় সে হিসেব রাখে না। ওর কাছে পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ সব সমান। মনে করে যেদিকে চোখ যায়, সেদিকেই ওর জন্য রাস্তা খােলা।”
পুরাে গ্রাম আর হাটবাজার হয়ে উঠল বুধার বিচরণক্ষেত্র। চেনা-জানা সব মানুষ হয়ে উঠল তার আপনজন। একদিন ঐ গ্রামে মিলিটারি ঢুকে পড়ল । পুড়িয়ে দিল বাজারের দোকানপাট। বিস্মিত বুধা, কেন তারা এমন করল? কী এমন অপরাধ করেছে এ দেশের মানুষ? ভীষণ ক্ষুব্ধ হলাে সে। ভাবল, এর প্রতিকার হওয়া দরকার।
এ অন্যায়ের প্রতিশােধ নেওয়া দরকার। মুক্তিযুদ্ধ কী তা সে না বুঝলেও মুক্তিযুদ্ধ যে শুরু হয়ে গেছে, এটা তার বুঝতে অসুবিধা হলাে না। সে সহজেই উপলব্ধি করে যে, ঐ মিলিটারি সবাই বিদেশি। তারা এদেশের মানুষ নয়। এদের বিরুদ্ধে লড়াই করা জরুরি। শুধু এরা নয়, যারা এদের সহায়তা করছে, তাদের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হবে ।
প্রিয় পাঠক সাহেব! আপনি এই পোষ্টে কাকতাড়ুয়া উপন্যাসের পটভূমি কি এ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে পড়তেছেন। পাশাপাশি কাকতাড়ুয়া উপন্যাসের মূলভাব সহ আপনার পাঠ্যবইয়ের আরও সকল পাঠ নিছে থেকে পড়ে নিতে পারেন।
হানাদারদের আক্রমণে জান ও মাল বাঁচাতে নােলক বুয়া, হরিকাকু আর রানিদের মতাে শত শত মানুষ গ্রাম ত্যাগ করে অজানার পথে পা বাড়ায়। বুধা তাদের মতাে গ্রাম ছেড়ে যেতে চায় না। সে ছােট হলেও ভিতু নয়। ওদের বিরুদ্ধে সে লড়াই করবে। ও ঠিকই বুঝে যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এসব বিদেশির বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলেছেন।
বুধা মাঝেমধ্যেই কাকতাড়ুয়া সেজে যেমন মজা করে, তেমনই কাকতাড়ুয়ার দৃষ্টিতে সে পুরাে গ্রামটাকে, গ্রামের মানুষকেও পর্যবেক্ষণ করে। সে দেখে পুরাে গ্রাম যেন দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একদিকে আহাদ মুন্সির মতাে হানাদারদের সহযােগীর দলে, অন্যদিকে মিঠু, আলির মতাে প্রতিশােধস্পৃহায় ছটফট করতে থাকা স্বাধীনতাকামীদের দলে। বুধা নিজের ভেতরে এক অনির্বচনীয় জোশ ও তাড়না অনুভব করে।
আকস্মিকভাবে ও চেঁচিয়ে ওঠে ‘যুদ্ধ, যুদ্ধ। স্বাধীনতা, স্বাধীনতা!! মুক্তিযােদ্ধা আলি ও মিঠু রাতের আঁধারে গ্রামে এলাে। বুধাকে বলল স্কুলের মিলিটারি ক্যাম্পটা উড়িয়ে দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল বুধা। প্রথমে পুড়িয়ে দিল শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আহাদ মুন্সির বাড়ি। তারপর রাজাকার কমান্ডারের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল।
বাপ-মা ও চার ভাই-বােন হারানাে পাগল স্বভাবের কিশাের বলে কেউ তাকে তেমন একটা সন্দেহ করল না। মুক্তিযােদ্ধাদের নেতা শিল্পী শাহাবুদ্দিন তাকে মাইন পুঁতে ক্যাম্পটা উড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দেন। বাঙ্কার খোড়ার সময় কৌশলে সে তার ভেতর মাইন পুঁতে চলে এলাে নদীর ধারে। এখানেই অপেক্ষা করছিলেন শাহাবুদ্দিন এবং তার সহযােদ্ধারা।
অবশেষে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এলাে। পাকিস্তানি সেনারা বাঙ্কারে ঢুকতেই মাইনের বিস্ফোরণে পুরাে ক্যাম্পটা উড়ে গেল। নদীতে নৌকায় বসে শাহাবুদ্দিন, বুধা শুনতে পেল সেই শব্দ। সফল হলাে তাদের অভিযান।
ধন্যবাদ আপনার অনুসন্ধানের জন্য এবং আমাদের সাইটে ভিজিট করার জন্য। আশাকরি আপনি আপনার কাঙ্খিত অনুসন্ধান কাকতাড়ুয়া উপন্যাসের পটভূমি কি বা মূলভাব বিষয়বস্তু , মূল বক্তব্য আমাদের সাইটের মাধ্যমে খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছেন।